ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

নতুন ভবন পাচ্ছে চকরিয়া উপজেলা আ’লীগ

নিউজ ডেস্ক ::   একেবারে জরাজীর্ণ হয়ে পড়া সেমিপাকা ঘর ভেঙে বহুতল বিশিষ্ট ভবন পেতে যাচ্ছে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা আ’লীগ। যে ভবনকে স্থায়ী কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে স্থানীয় আ’লীগ। ইতোমধ্যে নতুন এই ভবনের নির্মাণকাজও শুরু করা হয়েছে। এনিয়ে আ’লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের দীর্ঘদিনের একটি দাবি পূরণ হতে যাচ্ছে। ১৯৯৬ সালের পর থেকে পৌরসভার ভরামুহুরীতে ভাড়া বাসায় দলীয় কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসলেও সেই ভাড়া বাসাটি একেবারেই জরাজীর্ণ এবং ব্যবহার অনুপযোগী পড়েছিল। সম্প্রতি সেই জরাজীর্ণ সেমিপাকা বাসাটি ভেঙে স্থায়ী ভবন নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ জাফর আলম, চকরিয়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর চৌধুরীর ব্যক্তিগত অর্থায়নে স্থায়ী কার্যালয় পেতে যাচ্ছে উপজেলা আ’লীগ।
উপজেলা ও পৌরসভা আ’লীগ নেতাকর্মীরা জানান, দেশ স্বাধীনের পর ১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মতো আ’লীগ ক্ষমতায় আসলে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা আ’লীগের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছিল পৌরসভার ভরামুহুরীর মেঘনাথের ভাড়া বাসায়। তৎকালীন উপজেলা আ’লীগের নেতৃবৃন্দরা ওই বাসাটি ভাড়া নিয়ে দলীয় কার্যক্রমের সূচনা করেন। সেই থেকে ভাড়া বাসাটি হয়ে উঠে আ’লীগের রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু। পরবর্তীতে সেই ভাড়া বাসাটি একেবারেই জরাজীর্ণ হয়ে পড়লে ভেতরে বসারও কোন পরিবেশ ছিল না। বৃষ্টি হলেই পানি ঢুকে ভেতরের মালামাল পর্যন্ত ভিজে যেত। এর পরও সেই ভাড়া অফিসটিতে কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল উপজেলা আ’লীগ। বর্তমান উপজেলা আ’লীগও দলীয় যে কোন সভাসহ দাপ্তরিক সকল কর্ম সম্পাদন করে আসছেন সেই ভাড়া অফিসে।
কক্সবাজার জেলা আ’লীগের সদস্য আমিনুর রশীদ দুলাল চকরিয়া নিউজকে বলেন, দলীয় নেতাকর্মীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়া চকরিয়া উপজেলা আ’লীগের জরাজীর্ণ বাসাটি ভেঙে নতুন এবং স্থায়ী কার্যালয় নির্মাণ করার। অবশেষে নতুন ভবন নির্মাণকাজের উদ্বোধন হওয়ায় নেতাকর্মীদের মনে প্রাণের সঞ্চার হয়েছে।’
কক্সবাজার জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম লিটু চকরিয়া নিউজকে বলেন, সেই ছাত্রলীগের রাজনীতি দিয়েই আমার রাজনীতির পাঠশালা শুরু হয়। যখন আমি ছাত্র রাজনীতিতে জড়িত হই তখন থেকেই ঠিকানা ছিল ভরামুহুরীস্থ উপজেলা আ’লীগের কার্যালয়টি। কিন্তু পরবর্তীতে সেই কার্যালয়টি একেবারেই ব্যবহার অনুপযোগী এবং জরাজীর্ণ হয়ে অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠে। তখন থেকেই এই কার্যালয়টি স্থায়ীভাবে নির্মাণের দাবি করে আসছিলাম আমরা।
জাহেদুল ইসলাম লিটু আরো বলেন, ‘অবশেষে দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের প্রাণের দাবি ছিল উপজেলা আ’লীগের কার্যালয়টি নতুন এবং স্থায়ী ভবনে রূপান্তর করার। সেই দাবির প্রতি সম্মান দেখিয়ে বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও চকরিয়া-পেকুয়ার গণমানুষের নেতা জাফর আলম উদ্যোগ নিয়েছেন দলীয় কার্যালয়টি স্থায়ী ভবনে রূপ দিতে। আর জাফর ভাইয়ের সারথী হয়েছেন বর্তমান পৌর মেয়র আলমগীর চৌধুরী, উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীসহ দলের আরো কয়েকজন সিনিয়র নেতা।’
চকরিয়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর চৌধুরী  চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘নানা কারণে এতদিন উপজেলা আ’লীগের কার্যালয়টি স্থায়ী ভবনে রূপ পায়নি। এজন্য অনেকের ব্যর্থতাও রয়েছে। তাই চকরিয়া-পেকুয়ার গণমানুষের নেতা জাফর ভাই, গিয়াস ভাইসহ আমরা উদ্যোগ নিয়েছি দলীয় কার্যালয়টি স্থায়ী ভবনে রূপ দিতে। এজন্য অতিসম্প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে ভিত্তিপ্রস্তুরও স্থাপনসহ কাজের প্রাথমিক উদ্বোধন করা হয়েছে।’
এ ব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের সভাপতি জাফর আলম চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘দলীয় নেতাকর্মীদের প্রাণের দাবি ছিল উপজেলা আ’লীগের একটি স্থায়ী কার্যালয় তথা বহুতল ভবন নির্মাণ করার। কিন্তু কয়েকযুগ ধরে যেসব সিনিয়র নেতা জেলা এবং উপজেলা আ’লীগের দায়িত্ব পালন করেছেন, তারা দলীয় কার্যালয়টি স্থায়ী ভবনে রূপ দিতে কোন কাজই করেননি। জাফর আলম আরো বলেন, ‘আমি পদ-পদবী ব্যবহার করে কারো কাছ থেকে অন্যায়ভাবে একটাকাও রোজগার করিনি। আমার ব্যবসায়িক টাকা বিলিয়ে দিয়ে আ’লীগের রাজনীতি করছি। এভাবে আজীবন আ’লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে দলীয় নেতাকর্মী এবং মানুষের সেবায় নিয়োজিত রাখতে চাই নিজেকে।’
জাফর আলম জানান, ইতোপূর্বে পেকুয়াতেও উপজেলা আ’লীগের দলীয় কার্যালয় নির্মাণ করে দিয়েছি আমি ব্যক্তিগত অর্থায়নে। যেখানে কোন স্থায়ী কার্যালয় ছিল না। বর্তমানে নতুন ভবনে পরিচালিত হচ্ছে উপজেলা আ’লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের কার্যক্রম। একইভাবে চকরিয়া উপজেলা আ’লীগ কার্যালয়ও নির্মাণকাজ শুরু করা হয়েছে। নতুন এই ভবনটি হবে তিন তলা বিশিষ্ট। যেখানে থাকবে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার।

পাঠকের মতামত: